মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১৭ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজারের টেকনাফে বাকিতে পণ্য না দেওয়ায় পিটুনিতে নিহত সবজি বিক্রেতা মোক্তার আহমদের (৫০) হত্যার বিচার চেয়ে সাংবাদিকদের সহযোগিতা চেয়েছেন নিহতের ২ সন্তান।
বৃহস্পতিবার দুপুর ২ টার দিকে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে এসে দুই সন্তান বলেছেন, পিতার মৃত্যুর পর মারধরকারি ব্যক্তির অব্যাহত হুমকি হয়রানীর কারণে এলাকায় থাকা যাচ্ছে না। মোটা অংকের টাকা বিনিযোগ করে উল্টো নিহতের পরিবারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার সহ হয়রানী শুরু করেছে।
নিহত সবজি বিক্রেতা মোক্তার আহমদ টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনচিপ্রাং এলাকার মৃত কাদির হোছনের ছেলে। বাকিতে সবজী না দেয়ায় গত ১৬ মার্চ মোক্তার আহমদকে প্রকাশ্যে মারধর করে আজিজুর রহমান বাদশা নামের এক ব্যক্তি। ১৭ মার্চ ভোরেই মারা যান মোক্তার আহমদ। অভিযুক্ত আজিজুর রহমান বাদশা হোয়াইক্যংয়ের উনচিপ্রাং এলাকার আবদুর রশিদের ছেলে।
এ ঘটনায় নিহতের ছেলে নুরুল মোস্তফা বাদি হয়ে আজিজুর রহমান বাদশাকে একমাত্র আসামি করে টেকনাফ থানায় ১৭ মার্চ হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর ২ টার দিকে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে আসেন নিহতের ছেলে মামলার বাদি নুরুল মোস্তফা এবং মেয়ে রুমানা বেগম।
নুরুল মোস্তফা বলেন, আমার পিতা মোক্তার উনচিপ্রাং এলাকায় সবজি বিক্রি আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। কিছুদিন আগে বাদশা আমার বাবার সবজির দোকান থেকে সবজি কিনে নিয়ে যায়। এবাবদ ১৫০ টাকা পেতেন। গত ১৬ মার্চ আবারও বাকিতে সবজির কিনতে আসেন বাদশা। এসময় আগের টাকা চাওয়ায় আমার বাবাকে মারধর করে। মারধরের এক পর্যায়ে জ্ঞান হারান আমার বাবা মোক্তার আহমেদ। স্থানীয় কয়েকজন তাঁকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তার বাড়িতে পৌঁছে দেন। কিন্তু ১৭মার্চ ভোরে তিনি রক্ত বমি সহ গুরুতর অসুস্থ বোধ করলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।’
পিতার মৃত্যুর পর পরই ময়না তদন্ত না করতে এবং পুলিশকে না জানানোর জন্য বাদশা নিহতের পরিবারকে চাপ প্রয়োগ সহ নানা প্রলোভন দেয়া শুরু করেন বলে অভিযোগ এনে নুরুল মোস্তফা বলেন, আমাদের ৭ লাখ টাকা দিয়ে চুপ রাখার চেষ্টা করেন দফায় দফায়। পিতার হত্যাকারির সাথে আপোষ না করে পুলিশকে অবহিত করে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছি। ময়নাতদন্ত হয়েছে, মামলাও করেছি। এখন প্রতিদিন নানাভাবে হুমকি দেয়ার পাশাপাশি আমার পিতা এবং আমাদের নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’
নিহতের মেয়ে রুমানা বলেন, মামলায় একমাত্র আসামি হওয়ার পরও প্রকাশ্যে ঘুরছে বাদশা, পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছে না। প্রকাশ্যে বলা হচ্ছে, টাকা দিয়ে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন তাদের পক্ষে নেবে। পুলিশকে টাকা দিয়ে চুপ রাখবে। আমাদের নানা মামলায় আসামি করে কারাগারে পাঠাবে। ফলে এলাকায় থাকাও সম্ভব হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে সাংবাদিকদের সহযোগিতার জন্য প্রেসক্লাবে এসেছি।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি বলেন, এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মামলা হিসেবে পুলিশ বিশেষ বিবেচনায় নিয়েছে। একজনকে আসামি করে এই হত্যা মামলাটি। আসামিকে গ্রেফতারে পুলিশ নানাভাবে তৎপরতা চালাচ্ছে। দ্রæত সময়ের মধ্যে আসামি গ্রেফতার করা সম্ভব হতে পারে।
আর কেউ হুমকি দিলে পুলিশকে অবহিত করার পরামর্শ দিয়ে ওসি বলেন, যারাই হুমকি দেবেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply